news | logo

৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ইং



প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে দেওয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন প্রিয়া সাহা

প্রকাশিত : জুলাই ২১, ২০১৯, ১৬:৩৯

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে দেওয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন প্রিয়া সাহা

আগামীর প্রত্যাশা ডেক্সঃ

হোয়াইট হাউজে ১৭ই জুলাই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে এক সাক্ষাতের সময় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি নিয়ে তার এক বক্তব্য নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার পর দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকারে তার বক্তব্যের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনকারী প্রিয়া সাহা।

আমেরিকাতেই এক সাংবাদিককে দেওয়া প্রিয়া সাহার ৩৫ মিনিটের সাক্ষাৎকারটি আজ (রোববার) ইউটিউবে প্রকাশ করেছে ঢাকায় তারই এনজিও ‘সারি’।

‘তিন কোটি ৭০ লাখ নিখোঁজ’

তিন কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু ‘নিখোঁজ’ হওয়ার এই পরিসংখ্যান তিনি কোথায় পেলেন – এই পশ্নের জবাবে প্রিয়া সাহা – যিনি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু অধিকার সংগঠন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক – বলেন, সরকারী পরিসংখ্যান থেকে তিনি এই তথ্য দিয়েছেন।

“২০০১ সালের পরিসংখ্যানে সংখ্যালঘুদের ওপর একটি চ্যাপ্টার রয়েছে। সেনসাস ( আদম শুমারি) অনুসারে দেশভাগের সময় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার ২৯.৭ শতাংশ। এখন তা কমে ৯.৭ শতাংশ।”

প্রিয়া সাহা বলেন, অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারাকাত ২০১১ সালে এক গবেষণা করে দেখিয়েছেন, প্রতিদিন গড়ে ৬৩২ জন সংখ্যালঘু সম্প্রাদায়ের লোক ‘হারিয়ে যাচ্ছে’।

“ঐ গবেষণা কাজের সাথে আমিও জড়িত ছিলাম। সুতরাং আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত।”

কোথায় গেছে সংখ্যালঘুরা?

নিখোঁজ হওয়া বলতে তিনি কী বুঝিয়েছেন? – এই প্রশ্নে প্রিয়া সাহা বলেন, “সংখ্যালঘুদের শতকরা ভাগ যদি এখনও একই রকম থাকতো তাহলে বর্তমানে তাদের সংখ্যা ৩ কোটি ৭০ লাখ বেশি হতো। সেটাই আমি বলতে চেয়েছি”

এ মানুষগুলো কোথায় গেছে? গুম হয়ে গেছে নাকি কোথাও চলে গেছে? – এরকম এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “আপনি একজন সিনিয়র সাংবাদিক, সচেতন মানুষ, সকল সচেতন মানুষ জানেন কোথায় গেছে, কী হয়েছে।”

প্রিয়া সাহা সাক্ষাৎকারে পিরোজপুর জেলায় তার নিজের গ্রামের এবং পরিবারের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, তার গ্রামে ২০০৪ সালেও ৪০টি হিন্দু পরিবার ছিল যা কমতে কমতে ১৩টিতে দাঁড়িয়েছে। কোথায় গেছে তারা- সাংবাদিকের এই প্রশ্নে প্রিয়া সাহা বলেন, “আপনাদেরই তা দেখার কথা, রাষ্ট্রের দেখার কথা।”

ঐ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০০৪ সালে তার বাড়িও পুড়িয়ে দেওয়া হয়, এবং তার পরিবারের বহু জমি-জমা স্থানীয় একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা হাতিয়ে নেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে কী বলেছিলেন

হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ধর্মীয় সংখ্যালঘু প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকের সময় প্রিয়া সাহা বলেন – ‘বাংলাদেশ থেকে ৩৭ মিলিয়ন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান নিখোঁজ হয়ে গেছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই।’ ঐ সময় তিনি মি ট্রাম্পকে বলেন, তিনি তার জমি হারিয়েছেন, তার বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

দায়ী কে- মি ট্রাম্পের এই প্রশ্নে প্রিয়া সাহা জবাব দেন – মুসলিম মৌলবাদী গোষ্ঠীরা এর জন্য জন্য দায়ী এবং তারা সবসময় রাজনৈতিক আশ্রয় পায়।

মার্কিন দূতাবাসের সমালোচনা

সাক্ষাতের এই ভিডিও ফুটেজ সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে, বাংলাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়।

সরকারী কয়েকজন মন্ত্রীও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন যে আমেরিকান প্রেসিডেন্টের কাছে ‘মিথ্যা এবং কাল্পনিক’ বক্তব্য দিয়ে প্রিয়া সাহা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রিয়া সাহাকে লক্ষ্য করে তীব্র গালমন্দ শুরু হয়। তার বিরুদ্ধে ঢাকার একটি আদালতে দেশদ্রোহিতার মামলা নিতে আর্জি করেন দুজন আইনজীবী যদিও সেগুলো আদালত খারিজ করে দিয়েছে।

এমনকী প্রধানমন্ত্রী হাসিনার পুত্র এবং উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ তার এক ফেসবুক পোস্টে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, উদ্দেশ্যমূলক-ভাবে তারা প্রিয়া সাহাকে ওয়াশিংটনে পাঠিয়েছে। “তারা জানে প্রিয়া সাহাকে নিয়ে গেলে তিনি সেখানে এধরনের ক্রুদ্ধ ও আপত্তিকর আপত্তিকর বক্তব্য দেবেন।”




সম্পাদক ও প্রকাশক : মি. আহমেদ

অফিস লোকেশন:

১১০, গোয়ালবাড়ী, কাফরুল

মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২০৬।

ফোন: ০১৯২২২৭৭৭৪৭ নিউজরুম: ০১৯২২২৭৭৭৩২

ই-মেইল: sales@bdwebs.com