news | logo

৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ইং



কর্কটক্রান্তি-দ্রাঘিমা রেখার ছেদবিন্দু ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু মানমন্দির

প্রকাশিত : জুন ৩০, ২০১৯, ০২:৪১

কর্কটক্রান্তি-দ্রাঘিমা রেখার ছেদবিন্দু ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু মানমন্দির

প্রত্যাশা ডেক্সঃ

ভাবতে পারেন আপনি যেখান দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন, সেই জায়গাটির বিশ্বের অচিন্ত্যনীয় ভৌগলিক গুরুত্ব রয়েছে। আর এই ভৌগলিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানটি বাংলাদেশেই অবস্থিত। গুরুত্বপূর্ণ এ স্থানটি হলো কর্কটক্রান্তি (tropic of Cancer) ও ৯০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমার (Longitude) ছেদবিন্দু। এই ছেদবিন্দুটি পড়েছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায়। আর এখানেই নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর নামে মানমন্দির নির্মাণের স্বপ্ন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ আপন মহিমায় এগিয়ে চলছে। মহাকাশে ডানা মেলেছে নিজেদের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১। এগিয়ে চলার এই অগ্রযাত্রায় শামিল হয়েছে এবার মানমন্দির নির্মাণের স্বপ্ন। আর এ স্বপ্নও নির্মাণ হচ্ছে আরেকটি স্বপ্ন-পদ্মাসেতুর কাছাকাছি ফরিদপুরের ভাঙ্গায়।

শুক্রবার (২৮ জুন) বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত লেখক, পদার্থবিদ ও শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘একটি স্বপ্ন’ প্রবন্ধে মানমন্দির নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ার সংবাদটি জানা যায়।

প্রবন্ধে তিনি জানিয়েছেন, পৃথিবীতে তিনটি পূর্ব পশ্চিম বিস্তৃত রেখা আছে, সেগুলো হলো কর্কটক্রান্তি (tropic of Cancer), মকরক্রান্তি (tropic of Capricon) এবং বিষুবরেখা (tropic of Equator)। ঠিক এরকম চারটি উত্তর দক্ষিণ বিস্তৃত রেখা আছে, সেগুলো হলো শূন্য ডিগ্রি, ৯০ ডিগ্রি, ১৮০ ডিগ্রি এবং ২৭০ ডিগ্রি দ্রাঘিমা।

চারটি উত্তর দক্ষিণ রেখা এবং তিনটি পূর্ব পশ্চিম রেখা, সব মিলিয়ে বারো জায়গায় ছেদ করেছে। বারোটি বিন্দুর দশটি বিন্দুই পড়েছে সাগরে মহাসাগরে, সেখানে কেউ যেতে পারে না। এর মধ্যে শুধু দুইটি ছেদবিন্দু পড়েছে স্থলভাগে। এর একটি পড়েছে সাহারা মরুভূমিতে সেখানেও কেউ যেতে পারে না। আর অন্য বিন্দুটি বাংলাদেশে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে কর্কট ক্রান্তি এবং ৯০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমার ছেদবিন্দুটি পড়েছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায়। ঠিক এখানেই ‘বঙ্গবন্ধুর নামে মানমন্দির নির্মাণ’ প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়ে গেছে।

ক্রান্তি এবং ৯০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমার ছেদ বিন্দুটি বের করার স্মৃতি তুলে ধরে প্রবন্ধে এ পদার্থবিদ জানান, একদিন কর্কট ক্রান্তি এবং ৯০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমার ছেদ বিন্দুটি খুঁজে বের করার জন্য বের হলাম। আগেই ম্যাপে জায়গাটি দেখে রেখেছি কিন্তু ঠিক কোন দিক দিয়ে যেতে হবে জানি না।  ভয় ছিল হয়তো গিয়ে দেখব আসলে সেটা একটা নদীর ভেতর কিংবা বিলের ভেতর পড়েছে। তখন আমার দুঃখের শেষ থাকবে না। কিন্তু দেখলাম জায়গাটি ছোট একটা রাস্তার পাশে একটা ক্ষেত।  আমি কর্কট ক্রান্তি এবং ৯০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমার ছেদ বিন্দুতে দাঁড়িয়ে একটা ছবি তুললাম।

আমি নিশ্চিত জমি চাষ করার সময় অনেক মানুষ এই বিন্দুটির উপর দিয়ে হেঁটে গিয়েছে কিন্তু এই জায়গাটির অচিন্ত্যনীয় ভৌগলিক গুরুত্ব অনুভব করে সম্ভবত আর কেউ এখানে পা দেয়নি। প্রতি বছর জুন মাসের ২১ তারিখ (অর্থাৎ ঠিক এক সপ্তাহ আগে) দুপুর বারোটার সময় কেউ যদি বাইরে দাঁড়ায় এবং আকাশে মেঘ না থাকে তাহলে আবিষ্কার করবে সূর্য ঠিক মাথার উপর এবং সেজন্যে সেখানে তার কোনো ছায়া পড়ছে না। কর্কট ক্রান্তি এবং ৯০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমার সেই ছেদ বিন্দুতে সেটি একেবারে পুরোপুরি আক্ষরিকভাবে সত্যি।

তিনি জানান, এখানে মানমন্দির নির্মাণ হলে শুধু দেশের পর্যটকরা সারা বিশ্ব থেকে মানুষ আসবে ভৌগলিক এ গুরুত্বপূর্ণ স্থানটি দেখতে।

সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেন জাফর ইকবাল। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীসহ উপস্থিত সকলে প্রস্তাবটি সাদরে গ্রহণ করেন।

এরেই মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানমন্দির’স্থাপন করার জন্য একটা প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে গেছে। কারিগরি কমিটি তৈরি করে এরইমধ্যে একটি সভাও হয়ে গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানমন্দির তৈরি করার জন্য ভাঙ্গাকে একেবারে আদর্শতম জায়গা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কেননা ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার পথ হচ্ছে দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে এবং এশিয়ান হাইওয়ের করিডোর-১ এর অংশ। এখানে বঙ্গবন্ধুর নামে মানমন্দির নির্মিত হলে তা হয়ে উঠবে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। -বার্তা২৪




সম্পাদক ও প্রকাশক : মি. আহমেদ

অফিস লোকেশন:

১১০, গোয়ালবাড়ী, কাফরুল

মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২০৬।

ফোন: ০১৯২২২৭৭৭৪৭ নিউজরুম: ০১৯২২২৭৭৭৩২

ই-মেইল: sales@bdwebs.com