news | logo

৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ইং



বিদায় বেলায় কাঁদিয়ে গেলেন ডিসি উম্মে সালমা তানজিয়া

প্রকাশিত : জুন ২৪, ২০১৯, ২০:৩২

বিদায় বেলায় কাঁদিয়ে গেলেন ডিসি উম্মে সালমা তানজিয়া

সরকারি চাকরিজীবীরা আসবেন, আবার বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যাবেন। এটাই নিয়ম। কিন্তু তিনি মানুষে ও অধিনস্থদের হৃদয়ে এক জায়গা করে নিয়েছেন যা সহজে ভুলার নয়। তিনি যেভাবে সাধারণ মানুষের মাঝে আসন করে নিয়েছেন, তা নিজ চোখে না দেখলে লিখে বোঝানো সম্ভব নয়।

সরকারি দপ্তরগুলোর কিছুটা আনুষ্ঠানিকতা থাকলেও বিভিন্ন সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান, এনজিও, স্কুল-কলেজসহ আরও কত শত মানুষের পক্ষ থেকে আসা ফুল বলে দিচ্ছে কতটা জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। ফুলে ফুলে ভরে গেছে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও তার বাংলো।

তিনি ফরিদপুরের বিদায়ী জেলা প্রশাসক বেগম উম্মে সালমা তানজিয়া, বর্তমান  শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ।

তিনি ফরিদপুরের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) দায়িত্ব পালন করেছেন পৌনে তিন বছর । সোমবার (২৪ জুন) সকালে নবাগত জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের হাতে দায়িত্ব তুলে দিয়ে বেলা ১১টার দিকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন তিনি।

বিদায়টা কেমন হয় সরকারি অন্যসব চাকরিজীবীদের যেন সেই বিষয়টিও নমুনা হিসেবে রেখে গেলেন উম্মে সালমা তানজিয়া। গত এক সপ্তাহে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে শতাধিক বিদায় অনুষ্ঠান হয়েছে। এতো বিদায় অনুষ্ঠান, এতো ফুল আগে কখনো দেখেনি কোনো জেলা প্রশাসক। আর তাকে নিয়ে আয়োজিত এমন কোনো বিদায় অনুষ্ঠান নেই যেখানে মানুষ কাঁদেনি। শুধুকি ফরিদপুর জেলার মানুষ কেঁদেছেন, পাশাপাশি কেঁদেছেন  সালমা তানজিয়া নিজেও। বিদায় বেলায় এতো দিনের সহকর্মীরাও কেঁদেছেন তাকে জড়িয়ে ধরে।

আর এই ভালোবাসা ফরিদপুরবাসী এমনিতেই দেখাননি। ২০১৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ‘বদলে দিতে চাই কিছুটা, বদলে যেতে চাই অনেকটা’ এই প্রত্যয় নিয়ে ফরিদপুরবাসীকে সেবা দেওয়া শুরু করেন জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া। মাত্র এক বছরের মাথায় ছাত্র-ছাত্রীদের আধুনিক ও নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার কাজ শুরু করে সফল হন। সে সময়ে ৩ শতাধিক স্কুলে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের ব্যবস্থা করেন।

২০১৭ সালে ঢাকা বিভাগের সেরা জেলা প্রশাসক নির্বাচিত হন। সে সময় তাকে সম্মাননাও দেওয়া হয়। পরের বছর ২০১৮ সালে ই-সেবা কেন্দ্র, ইউডিসি হেল্প ডেস্ক, ডিজিটাল হাজিরা ব্যবস্থা, শতভাগ ই-ফাইলিং এর মাধ্যমে ডিজিটাল ব্যবস্থায় কাজের গতি সঞ্চারণের জন্য আইসিটি ক্ষেত্রেও সেরা জেলা প্রশাসক নির্বাচিত হন তিনি। এভাবে ফরিদপুর জেলার উন্নয়নের স্বার্থে সততা, স্বচ্ছতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সর্বদা সজাগ ছিলেন ডিজিটাল বাংলাদেশের এই সারথি। ২৪ ঘণ্টা ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার থেকে তথ্য নিয়েছেন এবং সে অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন উম্মে সালমা তানজিয়া। তার কর্মের কারণেই স্মরণকালের স্মরণীয় বিদায়টি পেয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য,বেগম উম্মে সালমা তানজিয়া রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৯৮ সালে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে সহকারী কমিশনার হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় যোগদান করেন। এরপর বিভিন্ন জেলায় সহকারী কমিশনার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

গত ১৬ জুন উপ-সচিব পদ থেকে পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম-সচিব হয়েছেন তিনি। আগামীকাল ২৫ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগদান করবেন।




সম্পাদক ও প্রকাশক : মি. আহমেদ

অফিস লোকেশন:

১১০, গোয়ালবাড়ী, কাফরুল

মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২০৬।

ফোন: ০১৯২২২৭৭৭৪৭ নিউজরুম: ০১৯২২২৭৭৭৩২

ই-মেইল: sales@bdwebs.com