news | logo

১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২রা মে, ২০২৪ ইং



হলুুদ ও লাল তরমুজেই কৃষকের স্বপ্ন

প্রকাশিত : জুন ১৬, ২০১৯, ২২:০২

হলুুদ ও লাল তরমুজেই কৃষকের স্বপ্ন

প্রত্যাশা ডেক্স :
ফরিদপুরে গত দু’বছর যাবত চাষ হচ্ছে করা হচ্ছে বারোমাসি হলুদ ও লাল তরমুজ, যা খেতে বেশ সুস্বাদু । গত বছর স্বল্প পরিসরে এই ভিন্নধর্মী দুই ধরনের তরমুজ চাষ করে বাজার মূল্য ভালো পাওয়ায় চাষ বেড়ে এবার দ্বিগুন হয়েছে। তবে এই তরমুজে কৃষকরা বেশী লাভবান হওয়ায় সামনের বছরগুলোতে তরমুজের চাষ আরো বেশী হবে বলে জানিয়েছেন চাষীরা। এদিকে ভিন্নধর্মী এই তরমুজ চাষে জেলা জুরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

জানা যায়, জেলার সদরপুর, ভাঙ্গা, বোয়ালমারী, মধুখালী, সাতৈর, কাটাখালী, শৈলডুবি, মজুমদার বাজার ও যাত্রাবাড়ীসহ বেশ কিছু এলাকায় বিগত বছর থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে বারোমাসি হলুদ ও লাল তরমুজ চাষ শুরু করা হয়। এই তরমুজের দাম ভালো পাওয়ায় তরমুজ চাষের দিকে ঝুকছেন কৃষকরা। বিশেষ করে এই দুই ধরনের তরমুজ কৃষকরা বিষমুক্তভাবে চাষ করছেন।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কার্ত্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, হলুদ তরমুজ (কার্নিয়া) ও লাল তরমুজ (সুইট ব্লাক-২) মাত্র ৬০ দিনের মধ্যে চাষ করে ফলন পাওয়া যায়। এরমধ্যে হলুদ তরমুজ মাটিতে ও লাল তরমুজ মাচা (ব্যালচিং পদ্ধিতি) ও মাটিতে চাষ করা যায়।

তিনি আরো জানান, তেমন কোন পরিশ্রম না থাকায় খুব সহজে এই তরমুজ চাষ এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তবে কি পরিমান জমিতে এই তরমুজ চাষ হয়েছে এর কোন সঠিক তথ্য দিতে পারেনি কৃষি বিভাগ।

তবে জেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তরমুজ চাষে কৃষকদের সহায়তা করা হচ্ছে।

কাটাখালী এলাকার হলুুদ তরমুজ চাষী লিটন ফকির বলেন, আমি প্রথম এ এলাকায় হলুুদ তরমুজের চাষ শুরু করি। তরমুজ চাষ করে আমার সফলতা দেখে এখানকার অন্য কৃষকরা এ চাষ শুরু করেন। আমিও তাদেরকে নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছি, বীজ থেকে পরিচর্যা কিভাবে করতে হয়। তিনি বলেন, দত্ত সীডের মালিক তাপস দত্ত আমাকে প্রথমে এই বীজ দেন। তিনি অমাদের নানাভাবে মাঠে এসে এ ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন বলেই এর সুফল পাওয়া সম্ভব হয়েছে।

ভাঙ্গার সাদিপুর এলাকার কৃষক শেখ জুয়েল জানান, আমি ১০ শতাংশ জমিতে তাপসদার কথা মতো পরীক্ষা মূলকভাবে সুইট ব্লাক-২ বারোমাসি কালো তরমুজ চাষ শুরু করি। এর আগেও অনেক ফসল চাষ করেছি কিন্তু এতো লাভজনক কোন ফসল পায়নি। তিনি জানান, আমার খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকার মতো। আশা করছি ভাল লাভের মুখ দেখতে পাবো।

তিনি জানান, বারোমাসি লাল তরমুজ মাচাতে (ব্যালচিং পদ্ধতি) চাষ করেছি বিষ মুক্তভাবে। তরমুজটি সুস্বাদু ও দেখতে সুন্দর হওযায় এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বাজারে বলে তিনি জানান।

এদিকে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ব্যাপারীরা এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় এখান থেকে ট্রাকে করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছে সুস্বাদু হলুদ তরমুজ (কার্নিয়া) ও লাল তরমুজ (সুইট ব্লাক-২)।

ঢাকা থেকে আসা ব্যাপারী সুমন মাতুব্বর বলেন, দেশের বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যে কারেন যে দামই হোক আমরা এ তরমুজ কিনতে আসি এই বাজারে। তিনি বলেন দাম বেশী হলেই এর পার্থক্য সবার থেকে আলাদা করেছে বাজারে।

দত্ত সীডের মালিক তাপস দত্ত জানান, থাইলান্ড থেকে এ বীজ সংগ্রহ করেছেন তিনি। গত বছর কয়েকজন কৃষককে এই জাতের বীজ দেয়া হয়। এরপর এর সুফল দেখতে পেয়ে অন্য কৃষকরা এবার এ ধরনের তরমুজের চাষ শুরু করেছেন। তিনি আরো জানান, আমি মাঠে গিয়ে প্রতিটি কৃষককে এ ব্যাপারে সব সময় পরামর্শ প্রদান করেছি কখন কি করতে হবে। তার আশা এ তরমুজ বেশী সুস্বাদু হওয়ায় এবং বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় এবার থেকে এর চাষ অনেক পরিমানে বাড়বে।

বীষমুক্ত হলুদ তরমুজ (কার্নিয়া) ও লাল তরমুজ (সুইট ব্লাক-২) চাষে সরকারের সকল ধরনের সহযোগিতা পেলে সারা বছর দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও এই তরমুজ রপ্তানী করতে পারবে বলে কৃষকের প্রত্যাশা।




সম্পাদক ও প্রকাশক : মি. আহমেদ

অফিস লোকেশন:

১১০, গোয়ালবাড়ী, কাফরুল

মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২০৬।

ফোন: ০১৯২২২৭৭৭৪৭ নিউজরুম: ০১৯২২২৭৭৭৩২

ই-মেইল: sales@bdwebs.com