news | logo

২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৬ই মে, ২০২৪ ইং



সালথায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সেচ্ছাচারিতা সহ নারী গ্রন্থাগারিককে নির্যাতনের অভিযোগ

প্রকাশিত : অক্টোবর ২৩, ২০১৯, ০৮:৫২

সালথায়  প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সেচ্ছাচারিতা সহ নারী গ্রন্থাগারিককে নির্যাতনের অভিযোগ

এফ.এম.আজিজুর রহমান
সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বাঊষখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সাহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দূর্ণীতি ও সেচ্ছাচারিতা সহ বিদ্যালয়ের সহকারী নারী গ্রন্থাগারিক অজ্ঞু মজুমদারকে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত ২০ অক্টোম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর এক লিখিত অভিযোগ করেন ওই নারী গ্রন্থাগারিক। সেখানে তিনি প্রধান শিক্ষকের নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য নির্বাহী অফিসারের সাহায্য কামনা করেন।
লিখিত অভিযোগে ওই নারী গ্রন্থাগারিক অজ্ঞু মজুমদার বলেন, গত ২০১১ সালে আমি অত্র বিদ্যালয়ে চাকুরীতে যোগদান করিয়া অদ্যবধি সুনামের সাথে কর্মরত আছি। হঠাৎ করে এ বছরের গত জুন ও জুলাই মাসের বেতন অর্ধেক (সরকারি অংশ) বিল করে ব্যাংকে জমা দেয়। যাহাতে আমার কোন সাক্ষর নেওয়া হয়নি। আমার সাক্ষর জাল করে তিনি এই বিল জমা দিয়েছেন। কেন আমাকে অর্ধেক বেতন দেওয়া হবে তার কোন কারন ও দর্শায়নি তিনি। কোন সাময়িক বরখাস্তের চিঠি দেওয়া হয়নি আমাকে। প্রধান শিক্ষক আমার গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বর এর সরকারি বিল ও করে ননাই। এমনকি ১লা জানুয়ারী থেকে কোন সম্মানি বেতন ভাতা ও দেওয়া হয়নি আমাকে। তিনি আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে আমাকে মানসিক নির্যাতন করে আসছেন। আমি বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিত থাকা সত্ত্বে ও আমাকে হাজিরা খাতায় সাক্ষর করতে দেওয়া হয়না। অফিস ও শ্রেনীকার্যে অংশ গ্রহন করতে দেওয়া হয়না। এমনকি আমার সাথে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারিদের সাথে কথাবার্তা কোন প্রকার মতবিনিময় করতে দেওয়া হয়না। আমার এম.পি.ও কপি,নিয়োগ বোর্ডের কাগজপত্র, নিয়োগ পরীক্ষা নম্বার ফর্দ এবং নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কাগজ আটকিয়ে রেখেছেন। ওই গ্রন্থগারিক আরও বলেন, এই বছরের প্রথম দিকে আমাকে কোন কারন ছাড়াই সাময়িক বরখাস্তের ভয় দেখিয়ে ১লক্ষ টাকা দাবি করে। আমি কিছু না বুঝে তার এক বন্ধুর মাধ্যমে তাকে ১লক্ষ টাকা দেই। সেই টাকা কিছু দিন পর আবার আমাকে ফেরৎ দিয়ে দেয়। সদ্য আমার ব্যাংক এ্যাকাউন্ট চেক করে দেখা যায় সহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি কোন চেক ছাড়াই আমার এ্যাকাউন্ট থেকে এক মাসের পুরো বেতন উত্তোলন করেছে। এটা কি করে হলো আমার জানা নেই। তিনি বলেন, আমি অনেক ধর্য্য ধরেছি এখন আমার সংসার চলছেনা। আমি স্কুলে মানসিক যন্ত্রনা পাচ্ছি, আমার এই যন্ত্রনা থেকে বাঁচতে উর্ধতন কতৃপক্ষের সাহায্য কামনা করছি।
এ ছাড়াও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারী ও বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সাবেক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আকলিমা বেগম এর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ে। এলাকার লোকের তোপের মুখে পালিয়ে বাঁচে প্রধান শিক্ষক। বাঊষখালী বিদ্যালয়টি ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আজোবধী সুনামের সহিত চালিত হচ্ছে। এখন প্রায় ২ এক জমি রয়েছে বিদ্যালয়ের নামে এসব জমির আয়-ব্যায় সে কখনো কাউকে দেয়নি। কয়েকজন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও শিক্ষকরা নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক ব্যক্তিরা বলেন, প্রধান শিক্ষক এক ঘেয়েমী লোক, তার যা মনে হয় তাই করেন। অন্য কারো মতামতের ধার ধারেনা। তার বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। শুনেছি তার নাকি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে অনেক উপরে হাত রয়েছে। এই ভয় দেখিয়ে সকলকে আবদ্ধ করে রাখে। তাছাড়াও এলাকায় চাউর রয়েছে এক সময় তিনি জামায়েত এর একজন সক্রীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। এখন অনেকটা দলীয় কর্মকান্ড থেকে শীথিল রয়েছে। বিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ এমদাদ ফকির বলেন, আমি এই স্কুলে নতুন সভাপতি হয়েছি, এই ঘটনা অনেক আগের থেকেই। আমি এসে অনেক চেষ্টা করেও সমাধান করে উঠতে পারিনি। এখন উর্ধতন কতৃপক্ষের নিকট সহকারী গ্রন্থাগারিক গিয়েছে, তিনারা হয়তো এর সম্ধাান দেবেন। আমাকে ডাকলে আমি সহযোগিতা করবো।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা হলে তিনি এ বিষয় নিয়ে লেখালেখি করতে নিষেধ করেন। এবং বলেন এটা আমার স্কুলের অভ্যন্তরীন বিষয় এটা আমি সমাধান করে ফেলবো। দীর্ঘদিন যাবত একটি বিদ্যালয়ের একজন নারী সহকারী গ্রন্থাগারিক এত বড় একটি ঝামেলায় পড়ে আছেন আপনি আগে থেকে জানেন কিনা। এমন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আবুল খায়ের বলেন, বিষয়টি শুনেছিলাম তবে কেউ অভিযোগ না করলে কিভাবে ব্যবস্থা নেব। এখন লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত পূর্বক প্রায়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসিব সরকার বলেন, নারী গ্রন্থাগারিককের লিখিত অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।




সম্পাদক ও প্রকাশক : মি. আহমেদ

অফিস লোকেশন:

১১০, গোয়ালবাড়ী, কাফরুল

মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২০৬।

ফোন: ০১৯২২২৭৭৭৪৭ নিউজরুম: ০১৯২২২৭৭৭৩২

ই-মেইল: sales@bdwebs.com