news | logo

২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৬ই মে, ২০২৪ ইং



শীর্ষ নেতাদের দাম্ভিকতায় ডুবছে আলফাডাঙ্গা আওয়ামী লীগ, নতুন নেতৃত্বের দাবি

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৯, ১৩:৩৬

শীর্ষ নেতাদের দাম্ভিকতায় ডুবছে আলফাডাঙ্গা আওয়ামী লীগ, নতুন নেতৃত্বের দাবি

আগামীর প্রত্যাশা ডেক্সঃ

আলফাডাঙ্গা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব কার্যত দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়ছে। সম্প্রতি এ উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের ভরাডুবির ভেতর দিয়ে এই চিত্র আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

এছাড়াও দলীয় কার্মকান্ডে একধরনের স্থবিরতা লক্ষ্য করা গেছে। এই ঘটনার জন্য দলের একাংশের অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন, দলের বর্তমান শীর্ষ নেতৃত্বের দিকে।

গত ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় সর্ব শেষ। সেই সম্মেলনে দলের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আকরাম হোসেন এবং সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় দলের আরেক প্রবীণ নেতা মো. নূরুল বাশার মিয়াকে।

এই দুই নেতা এর আগেও আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই পদে দায়িত্বে ছিলেন। দলের শীর্ষ পদে থাকা দুই নেতা বয়সের ভারে অনকেটাই নিস্কৃয় এখন তারা। যে কারণেই দলের মধ্যে দেখা দিয়েছে দ্বিধা বিভক্ত।

ফরিদপুর-১ নির্বাচনী এলাকায় (শেখ আকরাম হোসেন ও নূরুল বাশার) দুই জনই এই আসনের সাবকে এমপি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আব্দুর রহমানের নিকট জন হিসেবে পরিচিত।


সময় মতো সম্মেলন না হওয়ায় উপজেলার তরুণ ও ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এতে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া প্রার্থীদের ভরা ডুবির ঘটনা ঘটেছে। দলের বেশ কিছু নেতাদের দাবি সঠিক ও যোগ্য প্রার্থীদের মনোনয়ন না দেওয়া এবং অর্থের বিনিময়ে প্রার্থী নিধারণ করাকে।

বর্তমান কমিটির সভাপতি শেখ আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে এলাকায়। এর মধ্যে অন্যতম হলো, এজেড পাইলোট উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন আওয়ামী লীগ স্থায়ী অফিস দলীয় কাজে ব্যহার না করে ভাড়া দিয়ে টাকা তুলছে এমন অভিযোগ দলটির সভাপতির বিরুদ্ধে , ইউপি নির্বাচনে অর্থের বিনিময়ে অযোগ্যদের প্রার্থী করা, দলের বিভিন্ন কমিটিতে নিজে পছন্দের এবং অর্থের মাধ্যমে পদ দেওয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগসহ দলটির সহযোগি সংগঠনের গুরুত্বপূর্ন পদে নিজ পরিবার ও আত্নীয়দের ২৬টি পদে বসানো, দলে ত্যাগী ও পরিশ্রমি নেতাদের দলীয় পদ থেকে বঞ্ছিত করা।

এছাড়াও আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছে তার (শেখ আকরাম হোসেনের) ভাই আব্দুস সালাম।

আলফাডাঙ্গা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আকরাম হোসেন তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে বলেন, আমার পরিবারে যদি যোগ্য লোক থাকে তো অবশ্যই তারা দলীয় পদ পাবে, তিনি বলেন এবারের সম্মেলনে ২৬ জন নয়, আরো দুই বা তিন জনকে দলের পদ দেওয়া চেষ্টা করা হবে।
আওয়ামী লীগ অফিস ভাড়া দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রদীপ নামে স্টিলের দোকানদার নিচ তলায় ব্যবসা করে, আমরা বিভিন্ন সময়ে তার কাছ থেকে চেয়ার বা মাইক নিয়ে দলীয় কর্মকান্ড করি। এই কারনেই তাকে ব্যবসা করতে দেওয়া হয়েছে।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা এ কে এম জাহিদুল হাসান জাহিদ দলের শীর্ষ নেতাদের নিস্কৃয়তার প্রসঙ্গে বলেন,  এ উপজেলার ৯৫ ভাগ লোক যেখানে আওয়ামী লীগ সমর্থন করে সেখানে নৌকা হারল কেন? নৌকার প্রার্থী আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, আওয়ামী লীগে অফিসটি দলের কাজে ব্যবহার না করে (স্টিলের দোকান) ভাড়া দিয়ে টাকা তুলে খাচ্ছে কয়েক বছর ধরে। তিনি অর্থের বিনিময়ে অযোগ্যদের দলীয় পদ ও বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থী করেন। এই সকল কারনে তার জনপ্রিয়তা নেই বললেই চলে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, দলকে ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহার করে সভাপতিই আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করেছেন।’

এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিস্কৃয়তার বিষয়ে দলের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহাদুল হাসান বলেন, ‘আলফাডাঙ্গা আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধই আছে। শুধু ভাগ হয়ে গেছেন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক।’ দলের প্রবীন এই দুই নেতার স্বেচ্ছাচারিতা আর নানা অনিয়মের কারনেই নেতাকর্মীরা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করেছে। তিনি দাবি করেন, দ্রুত দলের ত্যাগী ও যোগ্যদের দিয়ে আগামী সম্মেলনের মাধ্যমে দলকে সু-সংগঠিত করতে হবে।
আলফাডাঙ্গার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আ’লীগের সহ-সভাপতি খান বেলায়েত হোসেন বলেন, এই উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জিম্মি করে রেখেছেন দলের বর্তমান সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক। তাদের স্বৈরাচারি মনোভাবের কারনেই দলে মনোনিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থীর সৃষ্টি হচ্ছে। আর নির্বাচনে বিদ্রোহীরাই জয়ী হচ্ছে।
তিনি বলেন, এতে দল সাংগঠনিক ভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছে। তিনি দ্রুত সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব চান।

দীর্ঘ দিন আলফাডাঙ্গা আওয়ামী লীগের সম্মেলন না হওয়া বিষয়ে স্থানীয় এমপি মনজুর হোসেন বুলবুল বলেন, ‘দলকে এগিয়ে নিতে হলে সঠিক সময়ে সম্মেলনের প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

উপজেলা আওয়ামী লীগ বিভক্ত নেই উল্লেখ করে বলেন, দুই-একজন নেতার নিস্কৃয়তায় সংগঠন বসে থাকবে না।’ সংগঠনকে গতিশীল করতে দলের সকল পর্যায়ে নেতাদের সমন্বয়ে কাজ করা হচ্ছে।

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, যে কোনো রাজনৈতিক দলে সম্মেলন সঠিক সময়ে হওয়া উচিত। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগেই ফরিদপুরের যে সকল কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে সেগুলো দ্রুত শেষ করার জন্য কাজ চলছে।




সম্পাদক ও প্রকাশক : মি. আহমেদ

অফিস লোকেশন:

১১০, গোয়ালবাড়ী, কাফরুল

মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২০৬।

ফোন: ০১৯২২২৭৭৭৪৭ নিউজরুম: ০১৯২২২৭৭৭৩২

ই-মেইল: sales@bdwebs.com