news | logo

১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২রা মে, ২০২৪ ইং



মানমন্দির’ হচ্ছে একটি বিজ্ঞান গবেষণাগার

প্রকাশিত : জুলাই ০২, ২০১৯, ০২:৩৯

মানমন্দির’ হচ্ছে একটি বিজ্ঞান গবেষণাগার

প্রত্যাশা ডেক্সঃ

এক কথায় বললে ‘মানমন্দির’ হচ্ছে একটি বিজ্ঞান গবেষণাগার। ইংরেজিতে একে বলা হয় অবজারভেটরি (Observatory)।

বিজ্ঞান গবেষণায় আরও একধাপ অগ্রসর হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। নতুন এই স্বপ্নের নাম ‘বঙ্গবন্ধু মানমন্দির’। এই মানমন্দির স্থাপনের জন্য ইতিমধ্যে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সমীক্ষার পরই এর নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।

‘নির্মিত হচ্ছে মানমন্দির’ শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়েছে। এই প্রতিবেদন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনা লক্ষ্য করা গেছে। বেশিরভাগ মানুষের কাছ থেকেই এ বিষয়ে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াই পাওয়া গেছে। তবে মানমন্দিরের সঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপাসনালয়কে মিলিয়ে ফেলে এর সমালোচনাও করতে দেখা গেছে অনেককে। কিন্তু  ‘মানমন্দির’ আসলে কী?

এক কথায় বললে ‘মানমন্দির’ হচ্ছে একটি বিজ্ঞান গবেষণাগার। ইংরেজিতে একে বলা হয় অবজারভেটরি (Observatory)। বিশেষজ্ঞদের ভাষায়, মহাকাশের প্রতি মানুষের আকর্ষণ সহজাত। সূর্য-চাঁদ এবং গ্রহ-নক্ষত্রের গতিপ্রকৃতি ও আকৃতি নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই কারও। সেই প্রাচীনকাল থেকেই এই কৌতূহল মেটাতে নানা তৎপরতা চলছে। আকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য লোকালয় থেকে দূরে উঁচু পাহাড় বা খোলা প্রান্তরে অবকাঠামো গড়ে তোলার রেওয়াজও শুরু হয়েছে বহু আগেই। এসব অবকাঠামো ‘মানমন্দির’ নামে পরিচিত।

ধারণা করা হয়, খ্রীষ্ট-পূর্ব ৩৫০০ সালের দিকে মিসরে ‘মানমন্দির’ গড়ে ওঠে। প্রাচীন মিসরের পাশাপাশি মায়া, চৈনিক, ভারতীয় ও গ্রিক সভ্যতায় মানমন্দির বানিয়ে আকাশ পর্যবেক্ষণের নিদর্শন পাওয়া গেছে। সতেরশ’ শতকের শুরুতে গ্যালিলিও প্রতিসরণ দূরবীন আবিষ্কারের পর মহাকাশ পর্যবেক্ষণে বিপ্লব ঘটে। ধীরে ধীরে আধুনিক যন্ত্রপাতি উদ্ভাবিত হয়। মানুষের দৃষ্টি সম্প্রসারিত হয় কোটি কোটি আলোকবর্ষ দূরে। এখন মহাকাশেও হাবল টেলিস্কোপের মতো মানমন্দির গড়ে উঠেছে।

এর ধারাবাহিকতায় এবার বাংলাদেশেও মানমন্দির গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর এর জন্য ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলাকে নির্বাচন করা হয়েছে। বিশিষ্ট লেখক ও পদার্থবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল শুক্রবার বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত ‘একটি স্বপ্ন’ শিরোনামে প্রবন্ধে এই মানমন্দির নির্মাণের উদ্যোগের কথা জানান।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানমন্দির স্থাপনে ভাঙ্গাকে একেবারে আদর্শ জায়গা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কেননা ঢাকা থেকে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার পথ হচ্ছে দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে এবং এশিয়ান হাইওয়ের করিডোর-১ এর অংশ। এখানে বঙ্গবন্ধুর নামে মানমন্দির নির্মিত হলে তা হয়ে উঠবে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র।

ড. জাফর ইকবাল তার প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন, পৃথিবীতে তিনটি পূর্ব-পশ্চিম বিস্তৃত রেখা আছে, সেগুলো হলো কর্কটক্রান্তি, মকরক্রান্তি এবং বিষুবরেখা। ঠিক এরকম চারটি উত্তর-দক্ষিণ বিস্তৃত রেখা আছে, সেগুলো হলো– শূন্য ডিগ্রি, ৯০ ডিগ্রি, ১৮০ ডিগ্রি এবং ২৭০ ডিগ্রি দ্রাঘিমা। চারটি উত্তর-দক্ষিণ রেখা এবং তিনটি পূর্ব-পশ্চিম রেখা সব মিলিয়ে বারো জায়গায় ছেদ করেছে। বারোটি বিন্দুর দশটি বিন্দুই পড়েছে সাগরে-মহাসাগরে। এর মধ্যে শুধু দুটি ছেদবিন্দু পড়েছে স্থলভাগে। এর একটি পড়েছে সাহারা মরুভূমিতে আর অন্য বিন্দুটি বাংলাদেশে।

আরও নির্দিষ্ট করে বললে কর্কটক্রান্তি এবং ৯০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমার ছেদবিন্দুটি পড়েছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায়। তাই এখানেই মানমন্দির নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।




সম্পাদক ও প্রকাশক : মি. আহমেদ

অফিস লোকেশন:

১১০, গোয়ালবাড়ী, কাফরুল

মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২০৬।

ফোন: ০১৯২২২৭৭৭৪৭ নিউজরুম: ০১৯২২২৭৭৭৩২

ই-মেইল: sales@bdwebs.com