news | logo

৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ইং



মধুখালীতে সরকারি জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ, অভিযোগ আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে

প্রকাশিত : জুলাই ০৯, ২০১৯, ১৪:৩৪

মধুখালীতে সরকারি জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ, অভিযোগ আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে

ফরিদপুর অফিসঃ
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় সরকারি খাস জমি ও পাউবোর (পানি উন্নয়ন বোর্ডের) জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের মধুমতি নদীর তীর সংলগ্ন নওপাড়া বাজার ও বাজার সংলগ্ন এলাকায়।

এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে ওই এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মো. আমির হোসেন ও আলাউদ্দীন আল আজাদ ‘সরকারি জমি আত্মসাৎ ও গ্রাস প্রতিরোধে জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণ ও নির্মাণ কাজ বন্ধ করার আবেদন’ করেছেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসকের নিকট।

অনুলিপি দেওয়া হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত ফরিদপুর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক এবং মধুখালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে।

ওই আবেদনে হাবিবুর রহমান এবং তার আরও চার সহযোগী আবু বক্কর সিদ্দিকী, আবু হানিফ মোল্লা, মতিয়ার রহমান ও মো. শামসুল হক এর নাম উল্লেখ করে সরকারি খাস জমি দখল করে পাকা ও সেমি পাকা ইমারত নির্মাণ করে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এনে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়।

সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, নওপাড়া বাজারের উত্তর পাশে বাজারের জমিতে তিনটি টিনের ঘর তুলে আবু হানিফ মোল্লা (৭০), আবু হাশেম মৃধা (৫২) ও শফিউদ্দিনের মৃধার (৫৫) কাছে ভাড়া দিয়েছেন হাবিবুর রহমান। পশ্চিম পাশে একটি দোকান ঘর তুলে ভাড়া দেওয়া হয়েছে রহমাতুল করিমের (৩২) নিকট। বাজারের মাঝামাঝি তিনটি ঘর তুলে হাবিবুর রহমান একটি ভাড়া দিয়েছেন আনোয়ার মিয়া (৪২) কে এবং দুটি ভাড়া দিয়েছেন নজরুল ইসলামকে (৪১)।

মধুমতি নদীর পাড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় ঘর তুলে ধানের মিল হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়েছে জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের (৪০) কাছে। বাজারের পাট বাজারের সাথে তিন শতাংশ ফাঁকা জমি বেড়া দিয়ে আটকে রেখেছেন হাবিবুর রহমান। মাছ বাজারের পূর্ব পাশে হাবিবুর রহমান তিনটি ঘর তুলে ভাড়া দিয়েছেন নির্মল সিকদার (৩৪), মাসুদ শেখ (৩৯) ও আব্দুর রহমানের কাছে (৪১)।

বাজারের মধ্যে লম্বা ১৫০ ফুট ও ৫০ ফুট প্রস্থের একটি পাকা ইমারত তুলছেন হাবিবুর রহমান ও তার সহযোগিরা। এখানে আগে একটি টিনের ঘর ছিল। এই জায়গায় আগে পেঁয়াজের আড়ত বসতো। ছিল ইউনিয়ন আ.লীগের নামে একটি কার্যালয়ও।

ওই বাজারের দোকানদার আমিনুল ইসলাম জানান, যেসব এলাকায় এ ঘরগুলি নির্মাণ করা হয়েছে এবং হচ্ছে এগুলি ২০০৭ সালে যৌথবাহিনী ভেঙ্গে দিয়ে সরকারি খাস জমি উদ্ধার করেছিল। তবে গত দুই/তিন বছর ধরে যৌথ বাহিনীর ভেঙ্গে দেওয়ার জায়গায় আবার দোকান ও স্থাপনা নির্মান করা হচ্ছে।

ওই বাজারের আরেক সব্যবসায়ী মো. আলী রেজা আ.লীগ নেতার এসব দখল নিয়ে কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করে বলেন, সব কিছু দেখবো, সব কিছু শুনবো কিন্তু কিছু বলার নেই।

নওপাড়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মিহির কুমার সাহা বলেন, যে জায়গায় হাবিবুর রহমান পাকা ইমারত বানাচ্ছেন সে জায়গায় আগে তার (হাবিবুর) ছাপড়া ঘর ছিল। তবে ওই জমি খাস না নিজস্ব তা বলার কায়দা নেই কাগজ না দেখে। তিনি বলেন, যৌথ বাহিনী ওই বাজারের যেসব স্থাপনা ভেঙ্গে দিয়েছিল সেগুলি পরে আবার নতুন করে নির্মিত হয়েছে।

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, তিনি নওপাড়া বাজারে সরকারি খাস জমি দখল করে কোন দোকান করেন নি বা কোন স্থাপনা নির্মান করছেন না। তিনি বলেন, তিনি নিজের জায়গায় দোকান করেছেন, স্থাপনা করছেন দাবি করে বলেন, ওইসব জায়গার রেকর্ড ও হাল দাগ সবই তার নামে। যারা তাঁর বিরোধীতা করছেন তারা তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বলেই যুক্তিহীনভাবে বিরোধীতা করছেন।

মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোস্তফা মনোয়ার বলেন, বাজারের জমির মালিক সরকার। কিন্তু যখন কোন জমিতে বাজার হয়েছে তখন কোন না কোন মালিকানার জমিতেই সে বাজার হয়েছে। যা পরবর্তিতে ঠিক করা হয়নি। একারনে সরকার বলছে বাজারের জমির মালিক সরকার, কিন্তু বিএস কিংবা আর এস দাগে দেখা যাচ্ছে ওই জমির মালিক আছে। একারনে অনেক বাজারের ক্ষেত্রে দেখা গেছে বাজারের জমির মালিক সরকার আবার সরকার না। এটি একটি জটিল সমস্যা। বাংলাদেশের বিভিন্ন বাজারে এ সমস্যা রয়েছে। আস্তে আস্তে এ সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, নদীর পাড়ে পাউবো’র জায়গা উদ্ধার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই দখলদারদের তালিকা করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী দখলমুক্তের কাজ শুরু করা হবে।




সম্পাদক ও প্রকাশক : মি. আহমেদ

অফিস লোকেশন:

১১০, গোয়ালবাড়ী, কাফরুল

মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২০৬।

ফোন: ০১৯২২২৭৭৭৪৭ নিউজরুম: ০১৯২২২৭৭৭৩২

ই-মেইল: sales@bdwebs.com