news | logo

১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং



প্রশ্নপত্র ফাঁস: দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা বাতিল

প্রকাশিত : এপ্রিল ১৭, ২০১৯, ০৯:৩৫

প্রশ্নপত্র ফাঁস: দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা বাতিল

সারাদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোর সরকারি বোর্ড আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়্যাহ’র দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল জামাত) পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের সনদ মাস্টার্স (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমান। পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হওয়ায় জরুরি এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয় আহমদ শফীর নিয়ন্ত্রণাধীন আল হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। বিগত কয়েকটি পরীক্ষায় ফরিদাবাদ মাদ্রাসাসহ দেশে কয়েকটি স্থানে দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের খবর পাওয়া যায়। এর পরই শনিবার সকালে জরুরি সভা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই বৈঠকে বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকের মেশকাতের (ফজীলত) কেন্দ্রীয় পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।

বৈঠকের এক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে ৩ মে পর্যন্ত তাকমীল হাদিসের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ১ মে বিশ্ব শ্রমিক দিবস উপলক্ষে পরীক্ষা বিরতি রয়েছে।

বোর্ডের কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, তার  সভাপতিত্বে শনিবার সকাল সাতটায় রাজধানীর মতিঝিলের আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের কার্যালয়ে একটি জরুরি বৈঠক হয়। এই বৈঠকেই পরীক্ষা বাতিলের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বোর্ডের একাধিক দায়িত্বশীল আলেম জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রমাণ পাওয়ায় তাকমিল হাদিসের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা হচ্ছিলো।

বৈঠকসূত্রে আরও জানা গেছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে বোর্ডের আলেমরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে তা প্রতিরোধ করতে নতুন করে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একইসঙ্গে প্রশ্নপত্র পরিবহন, কেন্দ্রে-কেন্দ্রে নেওয়া, বিশেষ তালার ব্যবস্থা করা, তালার চাবি সুনির্দিষ্ট এক থেকে দুজনের কাছে রাখার বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলেন বোর্ডের কর্তা আলেমরা।

সকাল সোয়া ৭টার দিকে শুরু হওয়া বৈঠক সকাল ৯টা ৫ মিনিট পর্যন্ত চলে। বৈঠকে আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, মাওলানা নুর হোসাইন কাসেমী, মুফতি রুহুল আমিন, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা শামসুদ্দিন জিয়া, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা সাজিদুর রহমানসহ বোর্ডের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে মাওলানা মাহফুজুল হক প্রশ্ন রাখেন, ‘পরীক্ষা বাতিলের যে বিষয়টি তা কি মিডিয়ার মাধ্যমে জানানো হবে কিনা। নাকি যেভাবে চলছিল সেভাবেই চলবে।’

বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক সদস্য জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে যেসব মাদ্রাসার নাম এসেছে, কেন্দ্রের তালিকা থেকে সে প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাতিল করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। পুরো বৈঠকেই বোর্ডের দায়িত্বশীল আলেমরা রুদ্ধদ্বার আলোচনা করেন।
এর আগে ৮ এপ্রিল থেকে আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের অধীনে দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা শুরু হয়। আগামী ১৮ এপ্রিল পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল। ছয়টি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে মোট ২৬ হাজার ৭২১ জন শিক্ষার্থী এ বছর পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।

ছয়টি শিক্ষা বোর্ড হলো- বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ, বেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া গওহরডাঙ্গা বাংলাদেশ, আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস বাংলাদেশ, আজাদ দ্বীনি এদারায়ে তালিম বাংলাদেশ, তানজিমুল মাদারিসিদ দ্বীনিয়া বাংলাদেশ এবং জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড।

উল্লেখ্য ২০১৭ সালের গণভবনে প্রধানমন্ত্রী আলেমদের উপস্থিতিতে কওমি মাদ্রসারা দাওরায়ে হাদীসের সনদকে মাস্টার্স (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) এর সমমান স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।  সে সময় গঠিত হয় দেশের ছয়টি কওমি মাদ্রসা বোর্ডের সমন্বয়ে গঠিত হয় আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ নামের এ সংস্থাটি। এ সংস্থার চেয়ারম্যান আহমদ শফী।




সম্পাদক ও প্রকাশক : মি. আহমেদ

অফিস লোকেশন:

১১০, গোয়ালবাড়ী, কাফরুল

মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২০৬।

ফোন: ০১৯২২২৭৭৭৪৭ নিউজরুম: ০১৯২২২৭৭৭৩২

ই-মেইল: sales@bdwebs.com