news | logo

৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ইং



পুলিশের ডিসি ইব্রাহিম বরখাস্ত

প্রকাশিত : আগস্ট ২৭, ২০১৯, ১৩:৫৯

পুলিশের ডিসি ইব্রাহিম বরখাস্ত

আগামীর প্রত্যাশা ডেক্সঃ

মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জমি দখলের সময় যথাযথ ভূমিকা না রাখায় ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহিম খানকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহিম খানকে সাময়িক বরখাস্ত করার তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহিম খানকে সরকারী কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ১২ (১) অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত করা সমীচীন মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

বর্তমানে পুরান ঢাকার ওয়ারি বিভাগের দায়িত্বে আছেন ইব্রাহিম। গত বছর পুলিশের লালবাগ বিভাগের প্রধানের দায়িত্বে থাকাকালীন নবাবপুর রোডে স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত শহীদ একেএম সামসুল হক খানের পরিবারের নামে বরাদ্দ করা জমি দখল করে ভবন ভেঙে ফেলা ও মালামাল লুট হওয়া ঠেকাতে ভূমিকা না রাখায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শহীদ বুদ্ধিজীবী সামসুল হকের মা মাকসুদা খানমের নামে ১৯৭৫ সালে বংশাল থানার নবাবপুরের ২২২ নম্বরের চার কাঠার তিনতলা বাড়িটি দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সামসুল হকের মায়ের মৃত্যুর পর তার ছোট ভাই আজাহারুল হক খানের নামে বাড়িটি নামজারি করে তার ছেলে বাড়িটি বর্তমানে ভোগদখল করছেন।

২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর স্থানীয় প্রভাবশালী আবেদ ও জাবেদ বেশ কিছু সন্ত্রাসী ভাড়া করে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করেন। সেখানে তার ম্যানেজারকে হাত-পা বেঁধে তার প্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচ কোটি টাকার মালামাল লুট করে। পরে ওইদিন ভোরে ২০০ জন শ্রমিক লাগিয়ে তাদের বাড়ি ভাঙচুর করেন।

এ ঘটনায় বংশাল থানায় অভিযোগ করা হলে ওই সময়ের বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাঈদুর রহমান দায়সারা গোছের একটি চুরির মামলা নেন। পরে বিষয়টি লালবাগ জোনের ডিসি মোহাম্মদ ইব্রাহিম খানকে জানালে তিনি গা ছাড়া ভাব দেখান। পরে অভিযোগকারী শামসুল হাসান জানতে পারেন যে বংশাল থানার ওসি সাঈদুর রহমান এক কোটি টাকা ও ওয়ারী বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ ইব্রাহিম খানকে দুই কোটি টাকা দিয়ে আবেদ ও জাবেদ তাদের বাড়িটি দখলের চেষ্টা করছেন।

এরপর শামসুল হাসান পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। আইজিপি বিষয়টি দেখার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে দায়িত্ব দেন। আছাদুজ্জামান মিয়া ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) শেখ নাজমুল আলমকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেন। কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়ে ওয়ারী বিভাগের ডিসির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ডিসি ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, তদন্তে অসহযোগিতা ও দায়িত্বে অবহেলার তথ্য উঠে আসে। তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চলতি বছরের ২৩ মে পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি (পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট-১) আমিনুল ইসলাম তাকে একটি চিঠি দিয়ে এসব অপরাধের বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চান।

এ ঘটনায় বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়। আর ডিসি ইব্রাহিম খানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

অভিযোগকারী শামসুল হাসান বলেন, ‘আমি থানায় গেলে ওসি আমাদের ভুল বুঝিয়ে একটি চুরির মামলা রেকর্ড করেন। বাড়ি ভাঙচুরের সময় বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা নানা ধরনের তালবাহানা করতে থাকেন। বিষয়টি ডিসিকে বললেও তিনিও গাছাড়া ভাব দেখান। পরে আমি আইজিপির কাছে অভিযোগ করি।’

এ ব্যাপারে জানতে ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহিম খানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।




সম্পাদক ও প্রকাশক : মি. আহমেদ

অফিস লোকেশন:

১১০, গোয়ালবাড়ী, কাফরুল

মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২০৬।

ফোন: ০১৯২২২৭৭৭৪৭ নিউজরুম: ০১৯২২২৭৭৭৩২

ই-মেইল: sales@bdwebs.com