news | logo

২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৪ঠা মে, ২০২৪ ইং



দেশজুড়ে আজ দিবাগত রাতই পবিত্র শবে বরাত পালনে প্রস্তুতি, ইফা’র ভুল ঘোষণা প্রত্যাখান

প্রকাশিত : এপ্রিল ২০, ২০১৯, ০২:২৯

দেশজুড়ে আজ দিবাগত রাতই পবিত্র শবে বরাত পালনে প্রস্তুতি, ইফা’র ভুল ঘোষণা প্রত্যাখান

অসংখ্য প্রত্যক্ষদর্শী চাঁদ দেখলেও পবিত্র শা’বান শরীফ মাসের চাঁদ না দেখার ঘোষণা দিয়ে পবিত্র শবে বরাত পালনে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও ধর্ম মন্ত্রণালয় ভুল ও বিভ্রান্তিকর ঘোষণার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদ দেখা যাচ্ছে। সকলেই সরকারী ভুল ঘোষণা প্রত্যাখান করে সঠিক তারিখ অর্থ্যাৎ আজ ২০ এপ্রিল ইয়াওমুস সাবত (শনিবার) দিবাগত রাতেই পবিত্র লাইলাতুল বরাত পালনের প্রস্তুতি নিয়েছেন ও মসজিদ সমূহে নানা আয়োজন করেছেন।
বিশেষ করে আর্ন্তজাতিক চাঁদ দেখা কমিটি ‘মাজলিসু রুইয়াতি হিলাল মজলিস’-এর পক্ষ থেকে বারবার নানাভাবে ইফা ও ধর্মন্ত্রণালয়কে সতর্ক করা হয়, প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষীদের সরাসরি সেখানে উপস্থিত করে স্বাক্ষ্য দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এরপরও সরকারী আমলারা তাদের ভুল ঘোষণা প্রত্যাহার করেনি। এর প্রেক্ষিতে রাজারবাগ দরবার শরীফ থেকে দেশবাসীকে আজ ইয়াওমুস সাবত (শনিবার) দিবাগত রাতেই পবিত্র লাইলাতুল বরাত পালনের আহ্বান জানানো হয়। দেশের নানা অংশ থেকে অনেকেই ইফা’র ঘোষণা প্রত্যাখান করে ‘মাজলিসু রুইয়াতি হিলাল মজলিস’-এর সাথে একাত্মতা পোষণ করে আজই পবিত্র লাইলাতুল বরাত পালনের প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে অনেকেই লেখালেখি করছেন। জাকারিয়া নামের একজন লিখেছেন, ইফার একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আপনারা আপনাদের মত করে শবে বরাত পালন করেন।
মুহম্মদ ইসহাক পারভেজ নামে একজন লিখেছেন, ‘চাঁদ দেখার সাথে মুসলমানদের বিশেষ দিবসসমূহ পালনের বিষয়টি জড়িত। এটা নিয়ে ইফার স্বেচ্ছাচারিতা দেশের জনগনের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
আরিক হাসান নামের এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘ভুল হতেই পারে। কিন্তু জানানোর পরও ভুল সংশোধন না করা একটি অন্যায়। উপরন্তু এটি ইসলামের সাথে জড়িত।
শাহজাহান সিরাজ নামের একজন লিখেছেন, ইফার ভুল তারিখ জনগন প্রত্যাখ্যান করে ২০ এপ্রিলই পবিত্র শবে বরাত দেশবাসী পালন করবে।
আবু সুফিয়ান নামের একজন মন্তব্য করেছেন, ইফার ভুল তারিখ ঘোষণার কারণে পরপর ৪ টি চন্দ্রমাস কখনোই ত্রিশদিন কিংবা উনত্রিশদিন হতে পারেনা। এটা বৈজ্ঞানিকভাবেও অসম্ভব।
হাবীবুন্নবী সোহেল নামের এক প্রবাসী লিখেছেন, এই ভুল ঘোষণার ফলে ইফার অকার্যকারিতার বিষয়টি ফুটে উঠেছে। পাশাপাশি ইসলামের বিষয়গুলো নিয়ে ছয় নয় করার কারণে কুফরীও হয়েছে। ক্ষমা চেয়ে ভুল স্বীকার না করলে ভবিষ্যতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কোন সিদ্ধান্তই মানুষ বিশ্বাস করবেনা।
কিন্তু ইসলামিক ফাউন্ডেশন তা গুরুত্ব দেয়নি। পরবর্তীতে ঢাকা প্রেসক্লাবে প্রত্যক্ষদর্শীরা আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করলে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সচেতন মহল ইফার দায়িত্বশীর কর্মকর্তা এবং ধর্মপ্রতিমন্ত্রীর কাছে আসল ঘটনা জানার জন্য অনবরত ফোন দিতে থাকে। তাছাড়া প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলনের পর বিষয়টি নিয়ে ইফার উপর আরও চাপ বাড়তে থাকে। শুধু খাগড়াছড়ি নয় আরও যেসব জেলা থেকে চাঁদ দৃশ্যমান হয়েছিলো এবং যারা প্রত্যক্ষদর্শী তারাও  এ নিয়ে বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ জানান। এরই মধ্যে রাঙামাটিতে ৬ জন বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) সদস্য চাঁদ দেখার সাক্ষী দিলে ইফার ভুল ঘোষণার বিষয়টি আরো পরিষ্কারভাবে দেশবাসীর কাছে ধরা দেয়। ফলে ইফা বিষয়টি নিয়ে কারচুপির আশ্রয় নিয়ে ১৩ এপ্রিল সাক্ষীদের ডাকলেও তাদেও কাছ থেকে কোন সাক্ষী না নিয়ে চাঁদ দেখার সাথে সংশ্লিষ্ট নয় এমন কিছু ব্যক্তিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে এবং ঘোষণা দেয় যে, এই কমিটি চাঁদ দেখার প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করবে। কিন্তু পরবর্তীতে সাক্ষীরা সাক্ষ দেয়ার জন্য ইফাতে গেলেও তাদেরকে ইফা কার্যালয়ে ঢুকতে না দিয়েই সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ঘোষণা দেয় যে, চাঁদ দেখা নিয়ে তাদের আগের ঘোষণাই বহাল থাকবে। এরপর প্রত্যক্ষদর্শীরা উচ্চ আদালতের শরনাপন্ন হলেও আদালতও এই বিষয়টিতে কোনো সিদ্ধান্ত প্রদান করতে অপারগতা প্রকাশ করে।
ইফা ভুল তারিখে পবিত্র শবে বরাতের তালিখের ঘোষণা দিলেও চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০ এপ্রিল দিবাগত রাতই শবে বরাত পালন করবে বলে জানিয়েছে ধর্মপ্রাণ মানুষ। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠেছে ঝড়।
নুরুল হুদা নামের এক ব্যবহারকারী লিখেছেন ‘অসংখ্য প্রত্যক্ষদর্শী চাঁদ দেখেছে। সে হিসেবে ২০ তারিখ দিবাগত রাতেই শবে বরাত। দেশের কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানের উচিত এই দিনেই শবে বরাত পালন করা’।
আলী ওয়াক্কাস নামের এক ব্যবহারকারী লিখেছেন ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ঘোষণা ইসলামের দলীল নয়। দলীল হচ্ছে শরীয়তের বিধান। যেহেতু শরীয়ত মোতাবেক ওইদিন চাঁদ দেখা গেছে সেহেতু ২০ এপ্রিল রাতেই আমরা শবে বরাত পালন করবো।’
আল ফুয়াদ নামের এক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন ‘ইফা শবে বরাতের ভুল তারিখ ঘোষণা দিয়ে দেশের কোটি কোটি মুসলমানকে শবে বরাতের নিয়ামত থেকে বঞ্চিত করতে চাচ্ছে। যদিও দেশবাসী এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে অবগত হয়েছে। তাই সবাই ২০ এপ্রিল দিবাগত রাতেই শবে বরাত পালন করবে”।




সম্পাদক ও প্রকাশক : মি. আহমেদ

অফিস লোকেশন:

১১০, গোয়ালবাড়ী, কাফরুল

মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২০৬।

ফোন: ০১৯২২২৭৭৭৪৭ নিউজরুম: ০১৯২২২৭৭৭৩২

ই-মেইল: sales@bdwebs.com